Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

আল্লাহ কেন শয়তানকে সৃষ্টি করলেন?

নাস্তিকদের একটি common প্রশ্ন এটি ৷ তারা মনে করে যদি শয়তানের সৃষ্টি না হত তবে পৃথিবীতে কেউ কোন অপরাধ করত না এবং সবাই বেহেস্তে যেতে ৷ আল্লাহ শয়তান বানিয়ে বেহেস্তে যাবার পথ বন্ধ করে দিয়েছে! ( নাউযুবিল্লাহ) 
আসলে কি তাই??

200% ভুল কথা এটি ৷ মূলত, কোরআন ,হাদীস না জানার জন্য এধরনের প্রশ্ন নাস্তিকরা উত্থাপন করছে ৷কারন আযাযিল, শয়তান হবার পূর্বেও জীনেরা অন্যায় এবং অপকর্ম করত এবং কোন শয়তান না থাকা সত্তেও আযাযিল আল্লাহর অবাধ্য হয়েছিল ৷

তাহলে সত্য কি???

শয়তানের পরিচয়ঃ

শয়তান এর বাংলা প্রতিশব্দগুলো হবে প্রতিদ্বন্দ্বী, শত্রু।  অবাধ্যতার কারনে আযাযিল  নামক জিনকে  শয়তান বলা হয়েছে ৷  ইবলিস হচ্ছে একজন "শয়তানের" নাম, তার মতন আরো অনেক "শয়তান" আছে জীন ও মানুষের মধ্যে।

শয়তান বা  ইবলিস ছিল একজন অকল্পনীয় পর্যায়ের ধার্মিক জীন। সে হাজার বছর ধরে আল্লাহর একনিষ্ঠ ইবাদাত  করেছিল ৷  সে ঠিক আমাদের মতই স্বাধীন ভাবে চিন্তা ও কর্ম করার অধিকার প্রাপ্ত সত্ত্বা ৷ ইবলিস  ইবাদাতের মাধ্যমে  আল্লাহর কাছে অতি প্রিয় হয়ে উঠে । চাইলে সে সাধারন ইবাদাহ করে একজন সাধারন জীন হয়ে থাকতে পারত, কিন্তু দিনের পর দিন, বছরের পর বছর সে আল্লাহকে খুশি করার জন্য ইবাদাত  করতেই থাকল আর আল্লাহ্‌ আস্তে আস্তে তাকে প্রমোশন দিতে থাকলেন, তার মর্যাদা বাড়াতে থাকলেন। ইবলিস হয়ে উঠেছিল একজন সত্যিকারের আল্লাহর দাস।
ইবলিস ছিল একজন জীন, কিন্তু আল্লাহ্‌ তাকে একদিন প্রমোশন দিয়ে করে দিলেন ফেরেশতাদের সর্দার !! এটা ইবলিসের অকল্পনীয় যোগ্যতার পুরস্কার ছিল। পবিত্র আলোর তৈরী ফেরেশতাদের মাঝে নেতা হয়ে গেল আগুনের তৈরী ইবলিস।

আল্লাহ্‌ তাকে সম্মান দিয়েছিলেন, পুরস্কার দিয়েছিলেন, নিজের সাথে ইবলিসকে কথা বলতে দেওয়ার মতন বিরল সম্মান দিয়েছিলেন ।

ইবলিস সম্মানের শ্রেষ্ঠতম পর্যায়ে উঠে গিয়েছিল। কিন্তু সে বুঝতে পারেনি, তার মনের ভিতর ঈমান ছাড়াও আরো কয়েকটি জিনিস খুব আস্তে আস্তে এক কনা এক কনা করে দানা বেঁধেছিল অহংকার৷
আল্লাহ্‌ আদম ( আঃ)কে কাদামাটি দিয়ে বানিয়ে তাঁর ভেতর রূহ দান করার পর আদম আঃ কে সেজদা দেয়ার জন্য বললেন ৷ কিন্তু আযাযিল সেজদা তো দিলই না বরং চরম ধৃষ্টতা দেখাল!

সূরা আ'রাফের ১১ ও ১২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-

وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآَدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ لَمْ يَكُنْ مِنَ السَّاجِدِينَ (11) قَالَ مَا مَنَعَكَ أَلَّا تَسْجُدَ إِذْ أَمَرْتُكَ قَالَ أَنَا خَيْرٌ مِنْهُ خَلَقْتَنِي مِنْ نَارٍ وَخَلَقْتَهُ مِنْ طِينٍ (12)

"আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরি করেছি। এরপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছি-আদমকে সিজদা কর তখন সবাই সিজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।" (৭:১১)

"আল্লাহ বললেনঃ আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সিজদা করতে বারণ করল? ইবলিস বা শয়তান বললঃ আমি তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে।" (৭:১২)


সে অহংকার করল এবং ক্ষমাও চাইল না বরং সকলকে জাহান্নামে নেয়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করল ৷

সূরা আ'রাফের ১৪ ও ১৫ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-

قَالَ أَنْظِرْنِي إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ (14) قَالَ إِنَّكَ مِنَ الْمُنْظَرِينَ (15)

"(তওবা ও অনুশোচনা না করেই) ইবলিস বললঃ আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন।" (৭:১৪)

"আল্লাহ বললেনঃ তোকে সময় দেয়া হল।" (৭:১৫)

এখানে আমরা কি দেখলাম??

(1) আযাযিল একসময় ইবাদত করে ফেরেশতাদের সরদার হয়ে গেল
(2) আল্লাহর অবাধ্য হয়ে শয়তান হয়ে গেল ৷

তারমানে হল,  তার ভাল এবং খারাপ উভয় কাজই করার ক্ষমতা রয়েছে কিন্তু সে শুধু খারাপ কাজই করে ৷

প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালা সকল কিছুই জোড়ায় জোড়ায় সৃস্টি করেছেন ৷
নারী-পুরুষ, রাত -দিন, ভাল - মন্দ ইত্যাদি ৷
মানুষ এবং জিন উভয়ের মাঝেও  তাই ভাল দিক এবং খারাপ দিক রয়েছে ৷

প্রশ্ন হল এই শয়তান একাই কি সমগ্র দুনিয়ার সকলকে বিপথে চালায়? সেই শয়তানের পরিনত হওয়া আযাযিল জীনই কি সকলের মনের খারাপ গুন জাগ্রত করে?
  না, সে একা নয় বরং পৃথিবীতে দুই ধরনের শয়তান আছে
(1) জিন শয়তান
(2) মানুষ শয়তান

"প্রত্যেক মানুষের এবং জিনের মধ্যে খারাপ কাজ করার প্রবনতা আছে , যেটা আমাদেরকে সারাক্ষন প্রলুব্ধ করতে থাকে।"

মানুষ এবং জিনদের মাঝে যে শয়তান রয়েছে তার প্রমাণ সরুপআল্লাহ সূরা নাস এ বলেন

5] الَّذى يُوَسوِسُ فى صُدورِ النّاسِ
[5] যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
[5] "Who whispers in the breasts of mankind,
[6] مِنَ الجِنَّةِ وَالنّاسِ
[6] জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

আল্লাহ বলেন,আরও বলেন  وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَيَاطِيْنَ الْإِنْسِ وَالْجِنِّ يُوحِي بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ زُخْرُفَ الْقَوْلِ غُرُوْرًا وَلَوْ شَآءَ رَبُّكَ مَا فَعَلُوهُ فَذَرْهُمْ وَمَا يَفْتَرُوْنَ ‘
আর এমনিভাবে আমরা প্রত্যেক নবীর জন্য বহু শয়তানকে শত্রুরূপে নিযুক্ত করেছি মানুষের মধ্য থেকে ও জিনদের মধ্য থেকে। তারা একে অপরকে মনোমুগ্ধকর কথা দিয়ে প্ররোচিত করে থাকে। যাতে তারা ধোঁকায় পতিত হয়। যদি তোমার প্রভু চাইতেন, তাহ’লে তারা এগুলি করতে পারত না। অতএব তুমি এদেরকে ও এদের মিথ্যা রটনাগুলিকে দূরে নিক্ষেপ কর’ (আন‘আম ৬/১১২)।

দেখুন, এখানে শয়তানকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জ্বিন শয়তান যা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয় এবং মানুষ শয়তান, যা প্রকাশ্যে মানুষকে কু-পরামর্শ দেয় ও পথভ্রষ্ট করে।

আস্তিক হোক আর নাস্তিক হোক, শয়তানের অস্তিত্ব মানুক আর না মানুক, প্রতিটি মানুষ স্বীকার করে যে প্রত্যেকটি মানুষের ভিতরে একটি পবিত্র অংশ ও একটি অন্ধকার অংশ আছে।
যখন একজন ব্যাক্তি ভাল কাজ করে তখন সে ভাল বলে গন্য হয় এবং যখন সে তার ভেতরে খারাপ গুনকে প্রাধান্য দেয় তখন সে খারাপ কাজ করে ৷
যদি সেই আযাযিল ফেরেশতা নাও থাকত তবুও মানুষ এবং জিন খারাপ কাজ করত, যেভাবে শয়তানের পরিনত হবার পূর্বেই আযাযিল জিনের পূর্বের জিনেরা বিভিন্ন পাপ কাজ করেছিল ৷
অতএব এটা বলার কোন সুযোগই নেই যে " আযাযিল জীন শয়তান হবার কারনে সকলে অন্যায় করে! যদি তাই কেউ বলে তবে তার কাছে আমার 2 টা প্রশ্ন
(1) জীন জাতি তাহলে কিভাবে এর পূর্বে অপরাধ করত? কার প্ররোচনায়?
(2) আযাযিল নিজে কিভাবে অবাধ্যতা করল এবং শয়তান হল?

লিঙ্ক গুলো দেখতে পারেন
http://islamiclearningmaterials.com/tafsir-for-rest-of-surah-annaas/

http://sunnahonline.com/library/the-majestic-quran/310-tasfir-of-chapter-114-surah-an-nas-mankind

http://i-onlinemedia.net/7388

Post a Comment

0 Comments