Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

নাস্তিকের প্রশ্ন ও জবাবঃ

প্রশ্নঃ
      কোরআন এর ভাষা আরবি কেন? অন্যকোন ভাষায় কোরআন নাজিল হলনা কেন?
-_----_----_----_----_----_----_---_---_----_-----_----_----_----_----_----_----_----_----_-----_----_----_----_---_
উত্তরঃ

যদি ভাষার ইতিহাসটা দেখতেন তবে কোরআন এর ভাষা কেন আরবি এই প্রশ্নটি কখনোই আসতনা!
যদি আমরা ভাষার ব্যাবহারের দিকে তাকাই তবে বর্তমান ব্যাবহারের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহার হয় -চীনা, ফরাসি, ইংরেজী ও আরবি ভাষা।

চীনা ভাষাঃ
চীনা-তিব্বতীয় ভাষাপরিবারের চীনা শাখার ভাষাসমূহ অনেক সময় চীনা ভাষা নামে পরিচিত। যদিও ম্যান্ডারিন চীনা ভাষাটি গণচীন ও চীন প্রজাতন্ত্রের (তাইওয়ান) একমাত্র সরকারি ভাষা, কথ্য চীনা ভাষার বিভিন্ন রূপ আছে। ১৩০ কোটি লোক চীনা ভাষায় কথা বললেও ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে চীনা ভাষাগোষ্ঠীতে সাত কিংবা দশটি ভাষা (বা উপভাষাগোষ্ঠী) আছে। সব চেয়ে বেশি ব্যাবহৃত হয় মাণ্ডারিন ভাষা!! চীনের ৭০% লোক এ ভাষায় কথা বলেন!! চীনের বাইরে এভাষার ব্যাবহার বা প্রভাব খুবই নগণ্য!!

ফরাসি ভাষাঃ
এ ভাষার ইতিহাস দেখলে দেখা যায় ৫ম - ৮শ শতকের দিকে এই ভাষার বিবর্তন শুরো হয়! ১৪শ- ১৫শ শতকের দিকে এটি মাঝা মাঝি পর্যায়ে আসে। আর আধুনিক আদর্শ ফরাসি ভাষার উদ্ভব ১৯ শতকে!

ইংরেজি ভাষাঃ
ইংরেজী ভাষার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ১৫শ শতকের দিকে আধুনিক ইংরেজী ভাষার উদ্ভব।
(সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)

এই দিক দিয়ে যদি বিচার করি তাহলে যে সময় আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল হয় তখন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাষা ইনংরেজী ও ফরাসি ভাষার অস্তিত্ব ছিল মাতৃ জঠরে। আর চীনা ভাষা বহু উপভাষায় বিভক্তির কারনে সেটাও কোরআন নাজিলের জন্য উপযুক্ত ছিলনা!!

এবার আসাযাক আরবি ভাষার বিষয়ে!!!!!

আরবী ভাষাঃ
প্রখ্যাত ভাষাবিদ ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র মতে, পৃথিবীতে ২৭৯৬টি ভাষা প্রচলিত আছে। প্রচলিত ভাষাগুলোর মধ্যে আরবি হলো সামি ভাষা পরিবারের অন্তর্গত সর্বপ্রাচীনতম একটি জীবন্তভাষা। 

ভাষাবিজ্ঞানে অন্য সকল ভাষার মতোই আরবিও পৃথিবীর একটি প্রচলিত ভাষা। এটি একটি পৃথিবীর বৃহত্তম সেমিটিক ভাষা। পৃথিবীর প্রায় ২৮৫ মিলিয়ন মানুষের জন্য এটি তাদের প্রধান ও মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবার করেন। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার প্রায় ২৫টি দেশের রাষ্ট্রভাষা আরবি। বিশ্বের প্রায় ২৫ কোটি লোক দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে আরবিকে বর্তমানে ব্যবহার করছেন। জনসংখ্যার দিক থেকে ইংরেজি এবং ফ্রেঞ্চ ভাষার পরেই আরবি ভাষার অবস্থান। তবে জনসংখ্যার তুলনাভিত্তিক আরবি ভাষার গুরুত্ব বিবেচনা না করে বরং দেশভিত্তিক আরবির অবস্থান বিচার করাই যুক্তিযুক্ত, যেহেতু জনসংখ্যার তুলনায় দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক ভাষা গবেষণা কেন্দ্রের তথা অনুযায়ী বিশ্বের ২৫টি দেশের দাপ্তরিক ভাষা আরবি, এমনকি জাতিসংঘের ৬টি দাপ্তরিক ভাষায় অন্যতম ভাষা এই আরবি। এছাড়া বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম অধ্যুষ্যিত এলাকাগুলোর আরবি ভাষা শিক্ষিত লোক সংখ্যা বিবেচনা করলে এ ভাষার গুরুত্ব সহজেই অনুমান করা যায়।

ধারণা করা হয়ে থাকে যে প্রায় তিন হাজার বছর পূর্বে এ ভাষা অস্তিত্বে আসে, যদিও এর লিখন প্রক্রিয়ার শুরু আরো অনেক পরে। মহানবী সা. এর আগমনের পূর্বেই উত্তর আরবের হিজাজ-নজদ এলাকায় লিখিত কোনো ব্যাকরণ ছাড়াই বিশুদ্ধ আরবি ভাষা চালু ছিলো। তবে আরব দেশে লিপির প্রচলন কিভাবে হয়েছিলো তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। [আ.ত.ম. মুসলেহ উদ্দীন, আরবি সাহিত্যের ইতিহাস, পৃষ্ঠা-১০৪]
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে এটিই একমাত্র ভাষা যা সবচেয়ে পুরাতন এবং এখনো অপরিবর্তিত!

বন্ধুগন,
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে দেখাযায় যে, অতীত ও বর্তমান ভাষা গুলোর বিবেচনায় কোরআন এর জন্য আরবিই সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য ও যৌক্তিক ভাষা। এরচেয়ে গ্রহনযোগ্য ভাষা না আগে ছিল আর না এখন আছে।

আশা করি যারা কোরআন এর ভাষা আরবি কেন, অন্য ভাষা নয় কেন বলে প্রশ্নকরেন তারা বুঝতে পেরেছেন যে কেন মাওলা আরবিকে কোরআন এর ভাষা হিসেবে মনোনীত করেছেন!

Post a Comment

0 Comments