Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

সূর্য গ্রহণ নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর বিরোদ্ধে অপপ্রচারের জবাব

সূর্য গ্রহণ নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর বিরোদ্ধে অপপ্রচারের জবাবঃ

*****************************************************
প্রশ্নঃ সূর্য গ্রহনের সময় মুহাম্মদ(সাঃ) ভয়ে বিবর্ণ হয়েযেত! কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিল বলেই এমন করত!!
জবাবঃ
******

মানুষেরা অত্যন্ত আনন্দ আর কৌতুহল নিয়ে সূর্যগ্রহন এবং চন্দ্রগ্রহন প্রত্যক্ষ করে থাকে। সূর্য ও চন্দ্র যখন গ্রহনের সময় হয় তখন আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর চেহারা ভয়ে বিবর্ণ হয়ে যেত। তখন তিনি সাহাবীদের নিয়ে জামাতে নামাজ পড়তেন। কান্নাকাটি করতেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

আরবীতে সূর্যগ্রহণকে 'কুসূফ' বলা হয়। আর সূর্যগ্রহণের নামাজকে 'নামাজে কুসূফ' বলা হয়। দশম হিজরীতে যখন পবিত্র মদীনায় সূর্যগ্রহণ হয়, ঘোষণা দিয়ে লোকদেরকে নামাজের জন্য সমবেত করেছিলেন। তারপর সম্ভবত তার জীবনের সর্বাদিক দীর্ঘ নামাজের জামাতের ইমামতি করেছিলেনন। সেই নামাজের কিয়াম, রুকু, সিজদাহ মোটকথা, প্রত্যেকটি রুকন সাধারণ অভ্যাসের চেয়ে অনেক দীর্ঘ ছিল।

সূর্য গ্রহণ নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর বিরোদ্ধে অপপ্রচারের জবাব

অবিশ্বাসী বিজ্ঞানীরা প্রথমে যখন মহানবী (সা.) এর এ আমল সম্পর্কে জানতে পারল, তখন তারা এটা নিয়ে ব্যঙ্গ করল (নাউযুবিল্লাহ)। তারা বলল, এ সময় এটা করার কি যৌক্তিকতা আছে? সূর্যগ্রহণের সময় চন্দ্রটি পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে বলে সূর্যগ্রহণ হয়। ব্যাস এতটুকুই! এখানে কান্না কাটি করার কি আছে? এখনো কিছু বাস্তব ধারনাহীন মানুষ অজ্ঞতা বশত রাসুলের(সাঃ) এই আমল নিয়ে উপহাস করে!

মজার বিষয় হল, বিংশ শতাব্দীর গোড়ার যখন এ বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করল, তখন মহানবী (সা.) এই আমলের তাৎপর্য বেরিয়ে আসল।

আধুনিক সৌর বিজ্ঞানীদের মতে, মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহ দু'টির কক্ষপথের মধ্যবলয়ে রয়েছে এস্টিরয়েড (Asteroid), মিটিওরিট (Meteorite) ও উল্কাপিন্ড প্রভৃতি ভাসমান পাথরের এক সুবিশাল বেল্ট, এগুলোকে এককথায় গ্রহানুপুঞ্জ বলা হয়। গ্রহানুপুঞ্জের এই বেল্ট (Belt) আবিষ্কৃত হয় ১৮০১ সালে। এক একটা ঝুলন্ত পাথরের ব্যাস ১২০ মাইল থেকে ৪৫০ মাইল।

বিজ্ঞানীরা আজ পাথরের এই ঝুলন্ত বেল্ট নিয়ে শঙ্কিত। কখন জানি এ বেল্ট থেকে কোন পাথর নিক্ষিপ্ত হয়ে পৃথিবীর বুকে আঘাত হানে, যা পৃথিবীর জন্য ধ্বংসের কারণ হয় কিনা?

প্রশ্ন হচ্ছে এই পাথর আমাদের জন্য ভয়ের কারন কেন? এত দূরের পাথর আমাদের দিকেই আসবে কিভাবে? আর আসলেইবা কি ক্ষতি?

উত্তর জানার জন্য একটু বিস্তারিত আলোচনা দরকার!
অভিকর্ষজ নিয়ম অনুযায়ী চন্দ্র ও সূর্য উভয়ই পৃথিবীর উপর বলীয় প্রভাব বিস্তার করে। আমরা জানি, অভিকর্ষ বল দুটি বস্তুর দূরত্বের বর্গের বিপরীতে হ্রাস পায়! পৃথিবী হতে সূর্যের দূরত্ব চন্দ্রের দূরত্বের ৪০০গুণ!  এই দূরত্বের কারনে সুবিশাল ভরসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও সূর্যের চাইতে চাদের অভিকর্ষ প্রতাপ পৃথিবীর উপর বেশি পড়ে। উভয় গোলকের অভিকর্ষ প্রভাবের প্রত্যক্ষ ফলাফলে সমুদ্রে জোয়ার -ভাটার সৃষ্টি হয়! বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী সূর্যের এই প্রভাবটি চাঁদের আকর্ষী বলের ৪৫ ভাগ।পৃথিবী চন্দ্রের কম দূরত্বের কারনে চাদ-পৃথিবী অভিকর্ষ শক্তি সূর্য-পৃথিবী অভিকর্ষ শক্তির চাইতে কম!

চাঁদ বা সূর্য যখন পৃথিবীকে আকর্ষন করে, এই আকর্ষী বলটি পৃথিবীকে সমস্ত বস্তু সমেত টেনে নিতে চায়! প্রকৃতির নিয়মের কারনে এটি সম্ভব হয়না। কঠিন বস্তুনিচয়ের উপরো এই বল কার্যকর হয়না---- বলটির প্রভাব যখন জলবিস্তারের উপর পড়ে,  তখন চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ জনিত টানের কারনে জলভাগ স্ফীত ও বলের দিকে নীত হতে চায়। বলটি এতটা শক্তিশালী নয় যে  ভূভাগের সমস্ত জলকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে, কিন্তু এর ততটা শক্তি রয়েছে যে বিপুল জলরাশীকে টেনে ধরে রাখতে সক্ষম। এই টানের দিকে জলের স্ফীত সৃষ্ট হয়। পৃথিবী গোলাকার এবং কঠিন ও অনড়, তাই এটানের প্রভাব ভূ-ভাগের সমস্ত জলরাশিতে পড়ে। ফলে জল বিস্তার স্থানচ্যুত হয়ে আসে বা আসতে চায়। ক্রমে ক্রমে জলীয় বলয়ে গতির সৃষ্টি হয় এবং জোয়ার আসে।
চাদের মত সূর্য ও পৃথিবীর জলরাশির উপর পৃথক একটি প্রভাব সৃষ্টি করে। যখন সূর্যের এই আকর্ষন চন্দ্রের আকর্ষণ রেখার উপর পতিত হয় বা সসমান্তরাল হয় তখন এই জোয়ারের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্য যখন মোটামোটি একই সরল রেখায় উপনীত হয়, তখন পৃথিবী জলীয়মন্ডলে যে প্রভাব পড়ে তাকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছে  Spring tide.
পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় এই জোয়ার সৃষ্টি হয়।
প্রতিদিন আমরা যে জোয়ারের সাথে পরিচিত, অমাবস্যা বা পূর্ণিমায় সে জোয়ার অপেক্ষাকৃত অধিকতর প্রভাবশালী।

চাঁদ যদি গ্রহণী সমতলে অর্থাৎ সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে সূর্য- চাঁদ - পৃথিবী এই বিন্যাসে একটি সরল রেখায় উপনীত হয়, তখন চাঁদের পূর্ণ ছায়া পৃথিবীর উপর পতিত হয়। চাঁদ টি সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে এমনভাবে থাকে যে, সূর্য আড়াল হয়ে যায়। তখন যে গ্রহন হয় তা হল সূর্য গ্রহন।
চাঁদ যখন পৃথিবী ও সূর্যের শূন্য লাইনে চলে আসে তখন তিন বস্তুর শক্তি ভেক্টরটি সূর্যের দিকে গতিমুখ করে থাকে। এই শক্তি ভেক্টরটি সাধারণত বেশি শক্তিশালী হয়। তখন কিন্তু সূর্য গ্রহন।আর এটি হতেপারে মহা সংকটকাল। ৩বস্তুর একত্রিত অভিকর্ষ শক্তি দূরে কোনো ধংসের আগন্তুককে ডেকে আনবার রাস্তাটি দেখিয়ে দেয়।
এই অবস্থাটি একটি অতিশয় নাজুক পরিস্থিতিরই নামান্তর, যা পরিণামে সর্বৈব ধংসের কারন হতে পারে।
সূর্যকে কেন্দ্র বিবেচনা করলে যে চিত্র আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারি তা হলো----
এসটিরয়েড ও মিটিওর বেল্ট, শনির পাথুরে বেল্ট, ওল্ট ক্লাউড এইসব অঞ্চলের অভিশপ্ত  আগন্তুকগনের জন্য(যারা পৃথিবীর কক্ষপথ ছেদ করে) পৃথিবী হল সর্ব প্রথম লক্ষ বস্তু! কোন কারনে কোনো সময়ে সূর্য-চন্দ্র পৃথিবী লাইনে তৈরী হবার পর গতিটানের অনুকূল দিকে সন্তরণমান কোনো মহাকাশীয় বস্তু যদি ক্ষুদ্র কৌণিক দূরত্ব নিয়ে আপতিত হয়,তবে এ সর্বনাশের মখে পৃথিবী হল প্রথম পরিণামবাহী!
অতীতে পৃথিবীর সঞ্চালন তলকে যেসব গ্রহাণুরা ছেদ করে গেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে ---- ইরোস ১৯৩১ সালে, ব্যাস ৩০ কিঃমিঃ।অ্যালবার্ট ১৯১১ সালে,ব্যাস ৫কিঃমিঃ।অ্যামোর ব্যাস ৮কিঃমিঃ। এছড়াও, এপোলো, অ্যাদোনিস ইত্যাদির আগমন ঘটেছিল ছিল । অনুরোপ ভাবে বিভিন্ন ধুমকেতুর আনাগোনা হয়েছে অতীতে।
এমনি একটি এসটিরয়েডের আঘাতে ৬কোটি ৫০লক্ষ বছর আগে যে বিপর্যয়ের সৃষ্ট হয়েছিল তার ফলে বিলুপ্ত হয়েছিল "ডাইনোসোরাস প্রজাতী"!!

পৃথিবীবাসীর জন্য এ হলো বড় দুঃসংবাদ!!

এজন্যই এইসময় রাসুল(সাঃ) সেজদায় পড়ে সৃষ্টির জন্য পানাহ চাইতেন!!

সুবাহানাল্লাহ! মাওলা বিরোধীদের অপপ্রচার হতে ঈমানদারদের হেফাজত করুন, আমিন!


১৪০০ বছর আগের কুর'আন এ মৌমাছির লিংগ নিয়ে তথ্য, বিজ্ঞান সঠিক প্রমান করেছে। ব্যাখ্যা


Post a Comment

0 Comments