চাঁদের নিজস্ব আলো আছে???
কুর’আন আল্লাহ “নিজে” সৃষ্টি করেছেন। এর ভাষা, ব্যাকরন, শব্দচয়ন, উপমা সবকিছু বিশেষ অর্থবহ । কুর’আনের একটি আয়াত বা শব্দ শুধুমাত্র “একটি” আয়াত বা শব্দ নয়, প্রত্যেকটি আয়াতের এবং শব্দের অনেক DEEP MEANING রয়েছে ৷ এর কিছু কিছু মানুষ শত শত বছর ধরে গবেষনা করে বের করেছে, আর কিছু কিছু জিনিস আল্লাহ-ই ভাল জানেন।
এই রকমই একটি শব্দ হল "নূর "!
নূর' আরবীতে একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ, এর অর্থ জ্যোতিঃ, দীপ্তি।
কোরআনে 194 যায়গায় আল্লাহপাক 'নূর' শব্দ ব্যবহার করেছেন। এই نورٌ শব্দের অর্থ করতে গিয়ে অনেকেই কোরআনের মূল উদ্যেশ্য থেকে দূরে সরে যান৷
কোরআনে "নূর "শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যাবহৃত হয়েছে যেমনঃ
১)আল্লাহ কে বুঝাতে ::পৃথিবী তার পালনকর্তার নূরে উদ্ভাসিত হবে।(যুমার- ৬৯)
আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি।(নূর – ৩৫)
২)কোরআন মজিদকে বুঝাতে ::তোমাদের কাছে একটি উজ্জল জ্যোতি এসেছে এবং একটি সমুজ্জল গ্রন্থ।(মায়েদা - ১৫)
৩)ঈমান বুঝাতে :: যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে।(বাকারা - ২৫৭)
৪)খোদায়ি হেদায়াত বুঝাতে :: আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে এমন একটি আলো দিয়েছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে, যে অন্ধকারে রয়েছে।(আনআম - ১২২)
৫)ইসলামী আইন বুঝাতে ::কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে।(তওবা- ৩২)
৬ )স্বয়ং রাসুল (সাঃ ) কে বুঝাতে :: আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর(রাসুল সা.)দিকে আহবায়করূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপরূপে।(সূরা আহযাব- ৪৬)
৬) ইলম বুঝাতে :: ইলম হচ্ছে এমন এক নূর খোদা যাকে চান তার অন্তরে দান করেন।
সারাংশঃ
কোরআন "নূর "কারণ কেননা তাতে খোদার কালাম রযেছে।
ইসলাম নূর কেননা তাতে খোদায়ি আইন রয়েছে।
রাসুল (সা.) "নূর "কেননা তিনি খোদার প্রেরিত ব্যাক্তি।
ইমাম (আ.) হচ্ছেন" নূর" কেননা তারা রাসুল (সা.) এর পরে ইসলামের হেফাযতকারী।
ঈমান হচ্ছে "নূর "কেননা খোদার সাথে মানুষ সম্পর্কিত হয়ে যায়।
ইলম হচ্ছে "নূর" কেননা তার মাধ্যমে খোদার সাথে পরিচিত হওয়া যায়।
এমনকি কোরআনে মোমিনের সব কাজ কে "নূর" এবং কাফেরের সব কাজে কে অন্ধকার বলা হয়েছে!
আচ্ছা, কোরআন,রাসূল, ইমাম, ঈমান, ইলম এবং মোমিন হতে কি ধরনের আলো বেড় হচ্ছে??
এখন আসি মূল প্রসঙ্গে
সূরা ইউসুফে আল্লাহ বলেছেন
5] هُوَ الَّذى جَعَلَ الشَّمسَ ضِياءً وَالقَمَرَ نورًا وَقَدَّرَهُ مَنازِلَ لِتَعلَموا عَدَدَ السِّنينَ وَالحِسابَ ۚ ما خَلَقَ اللَّهُ ذٰلِكَ إِلّا بِالحَقِّ ۚ يُفَصِّلُ الءايٰتِ لِقَومٍ يَعلَمونَ
[5] তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে।
(১০:০৫) নং আয়াতে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, 'সূর্যের' ক্ষেত্রে 'দিয়া' শব্দটি এবং 'চাঁদের' ক্ষেত্রে 'নূর' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
এই স্থানে "নূর " শব্দটি পেয়ে নাস্তিক এবং তাদের সহযোগীরা হাতে আসমান পেয়ে গেছে ৷ তাদের কথা হল " নূর অর্থ আলো ৷ অতএব কোরআন ভুল! কারন চাঁদের নিজস্ব আলো নেই কিন্তু কোরআনে বলেছে চাঁদের নিজস্ব আলো আছে "৷( নাউজুবিল্লাহ)
তাদের এই ধরনের কথার একমাত্র কারন হল তারা কোরআন ভাল ভাবে জীবনেও পড়েনা ৷যদি পড়ত তবে এত লাফালাফি করত না ৷
মূলত তারা বুঝতেই পারেনা যে সূর্য ও চাঁদ- দুটির ক্ষেত্রেই তো 'দিয়া' এবং 'নূর' এই দুটি শব্দের মধ্য থেকে যে কনো একটি শব্দ বেছে নিয়ে তা ব্যবহার করলেই হত। কিন্তু তা না করে মহান আল্লাহ দুটির ক্ষেত্রে দু'ধরনের আলো হিসেবে উপস্থাপন করলেন কেন? কারণ এগুলো যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি তো এ দুটো আলোর পার্থক্য ভাল করেই অবগত আছেন। তাই প্রথমত সহজভাবে দুটোকে দুই ধরনের আলো ('দিয়া' ও 'নূর') হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ৷
কিন্তু নাস্তিকরা " নূর " নিয়ে অজ্ঞান হয়ে বিজ্ঞানের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে!! তাদের জন্য আফসোস ছাড়া আর কি করার আছে??
0 Comments