Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

 নবী পত্নীদের নবীর মৃত্যুর পরেদ্বিতীয় বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়।এটা কি তাদের প্রতি অবিচার নয়? জবাবঃ

Counter postঃ
নাস্তিকের প্রশ্ন ও তার জবাবঃ

প্রশ্নঃ
****
ইসলামে স্বামীর মৃত্যুর পরে স্ত্রীদের বিয়ের অনুমতি দেয় অথচ আয়েশা(রাঃ) সহ কম বয়সী নবী পত্নিদের দ্বিতীয় বিয়ে হারাম করা হয়েছে। এটা কি তাদের প্রতি অবিচার নয়?

জবাবঃ
******
মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি!!
নবী পত্নীগন কি এব্যাপারে কখনো আফসোস করেছে বা তারা এই নির্দেশনাকে অমানবিক বলেছে?
যদি না বলে থাকেন তবে আপনাদের (মূত্রমনাদের) এত চুলকানী কেন?

যাইহোক,
এটা আল্লাহর বিধান। আর আল্লাহ্‌ সকল বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহনের অধিকার রাখেন।
আল্লাহ্‌ বলেন--

‘তিনি যা করেন সে ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না; বরং তাদেরকেই প্রশ্ন করা হবে।’ {সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত : ২৩}

তবে শরিয়তের সুনির্দিষ্ট উদ্ধৃতি এবং ইসলামের মূলনীতির আলোকে এর হেকমত ও তাৎপর্য অনুধাবনের মানসিকতায় কোনো দোষ নেই।

দুনিয়ায় নারীদের অবস্থা নিম্নোক্ত প্রকারগুলোর বাইরে নয় :
১- হয়তো সে বিয়ের আগেই মারা যাবে।
২- কিংবা সে মারা যাবে তালাকের পর অন্য কারো সাথে বিয়ের আগে।
৩- কিংবা সে বিবাহিতা কিন্তু –আল্লাহ রক্ষা করুন- তার স্বামী তার সঙ্গে জান্নাতে যাবে না।
৪- কিংবা সে তার বিয়ের পরে মারা যায়।
৫- কিংবা তার স্বামী মারা গেল আর সে আমৃত্যু বিয়ে ছাড়াই রইল।
৬- কিংবা তার স্বামী মারা গেল। তারপর সে অন্য কাউকে বিয়ে করল।

দুনিয়াতে নারীদের এ কয়টি ধরনই হতে পারে। আর এসবের প্রত্যেকটির জন্যই জান্নাতে স্বতন্ত্র অবস্থা রয়েছে :

১-  যে নারী বিয়ের আগে মারা গেছেন আল্লাহ তাকে জান্নাতে দুনিয়ার কোনো পুরুষের সঙ্গে বিয়ে দেবেন।
কারণ
আবূ হুরায়রা রাজিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেয়ামতের দিন যে দলটি প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল; আর তৎপরবর্তী দলের চেহারা হবে আসমানে মুক্তার ন্যায় ঝলমলে নক্ষত্র সদৃশ উজ্জ্বল। তাদের প্রত্যেকের থাকবে দু’জন করে স্ত্রী, যাদের গোশতের ওপর দিয়েই তাদের পায়ের গোছার ভেতরস্থ মজ্জা দেখা যাবে। জান্নাতে কোনো অবিবাহিত থাকবে না।’ [মুসলিম : ৭৩২৫]

শায়খ উসাইমিন বলেন, যদি ইহকালে মহিলার বিয়ে না হয়ে থাকে তবে আল্লাহপাক তাকে জান্নাতে এমন একজনের সঙ্গে বিয়ে দেবেন যা দেখে তার চোখ জুড়িয়ে যাবে। কারণ, জান্নাতের নেয়ামত ও সুখসম্ভার শুধু পুরুষদের জন্য নয়। বরং তা নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য বরাদ্দ। জান্নাতের নেয়ামতসমূহের একটি এই বিয়ে।

২- তালাকপ্রাপ্ত হয়ে আর বিয়ে না করে মারা যাওয়া মহিলার অবস্থাও হবে অনুরূপ।

৩- একই অবস্থা ওই নারীর, যার স্বামী জান্নাতে প্রবেশ করেন নি।  শায়খ উসাইমিন বলেন, ‘মহিলা যদি জান্নাতবাসী হন আর তিনি বিয়ে না করেন কিংবা তাঁর স্বামী জান্নাতি না হন, সে ক্ষেত্রে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করলে সেখানে অনেক পুরুষ দেখতে পাবেন যারা বিয়ে করেন নি।’ অর্থাৎ তাদের কেউ তাকে বিয়ে করবেন।

৪- আর যে নারী বিয়ের পর মারা গেছেন জান্নাতে তিনি সেই স্বামীরই হবেন যার কাছ থেকে ইহলোক ত্যাগ করেছেন।

৫- যে নারীর স্বামী মারা যাবে আর তিনি পরবর্তীতে আমৃত্যু বিয়ে না করবেন, জান্নাতে তিনি এ স্বামীর সঙ্গেই থাকবেন। 

৬- যে মহিলার স্বামী মারা যায় আর তিনি তার পরে অন্য কাউকে বিয়ে করেন, তাহলে তিনি যত বিয়েই করুন না কেন জান্নাতে সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গী হবেন।

কারণ,
আবু দারদা রাজিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ-
*********************************************
‘মহিলা তার সর্বশেষ স্বামীর জন্যই থাকবে।’ [জামে‘ ছাগীর : ৬৬৯১;  আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিস আস-সাহিহা : ৩/২৭৫]

হযরত হুযায়ফা রাজিআল্লাহু আনহু তাঁর স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন---
*******************************************************
‘যদি তোমাকে এ বিষয় খুশি করে যে তুমি জান্নাতে আমার স্ত্রী হিসেবে থাকবে তবে আমার পর আর বিয়ে করো না। কেননা জান্নাতে নারী তার সর্বশেষ দুনিয়ার স্বামীর সঙ্গে থাকবেন। এ জন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীদের জন্য অন্য কারো সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে জড়ানো হারাম করা হয়েছে। কেননা তাঁরা জান্নাতে তাঁরই স্ত্রী হিসেবে থাকবেন।’ [বাইহাকী, আস-সুনান আল-কুবরা : ১৩৮০৩]

এই দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। অল্প দিনের দুনিয়ার জীবনের পরিসমাপ্তির পরেই রয়েছে অনন্ত জীবন। সেই অনন্ত জীবনে জান্নাতের জীবনে অন্য সাধারণ কোন ব্যাক্তির স্ত্রী হওয়া সম্মানজনক নাকি হুজুর পাক (সাঃ) এর স্ত্রী হওয়া সম্মানজন?

অবশ্যই উত্তরটা সবার জানা যে রাসুল(সাঃ) এই দুনিয়ায় যেমন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ও সম্মানিত, তেমনি পরজগতেও তিনি সর্বোচ্চ সম্মান ও শ্রেষ্ঠতম অবস্থানের অধিকারী।

আর এজন্যই নবী পত্নীদের প্রতি অসামান্য করুণা আর ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ সরূপ  আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন
ঘোষনা করেনঃ-
﴿ اَلنَّبِىُّ اَوۡلٰى بِالۡمُؤۡمِنِيۡنَ مِنۡ اَنۡفُسِهِمۡ‌ وَاَزۡوَاجُهٗۤ اُمَّهٰتُهُمۡ‌ وَاُولُوۡا الۡاَرۡحَامِ بَعۡضُهُمۡ اَوۡلٰى بِبَعۡضٍ فِىۡ كِتٰبِ اللّٰهِ مِنَ الۡمُؤۡمِنِيۡنَ وَالۡمُهٰجِرِيۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ تَفۡعَلُوۡۤا اِلٰٓى اَوۡلِيٰٓٮِٕكُمۡ مَّعۡرُوۡفًا‌ؕ كَانَ ذٰلِكَ فِىۡ الۡكِتٰبِ مَسۡطُوۡرًا﴾

নিঃসন্দেহে নবী ঈমানদারদের কাছে তাদের নিজেদের তুলনায় অগ্রাধিকারী, আর নবীদের স্ত্রীগণ তাদের মা।(আহজাব-৬ প্রাসংগিক অংশ)

এই নির্দেশ প্রদান করেছেন তাদের এই দুনিয়া ও পরজগতে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করার জন্য।এই নির্দেশনা তাদের জন্য এক অনন্য সাধারন করুনা আর সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছুইনা!

আশাকরি বুঝতে পেরেছেন কেন রাসুল(সাঃ) এর বিবিগণকে অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে নিষেধ করা হয়েছে।

আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি মুসলিম নর,নারীদেরকে জান্নাতুন নাঈম দানে কামিয়াব করুন। আল্লাহ তাদেরকে হেদায়াতের পথের পথিক ও পথিকৃৎ বানিয়ে দেন এবং তাদের কাছ থেকে নারীর শত্রু ও ধ্বংসকারী নারী ও পুরুষ শয়তানকে দূরে সরিয়ে দেন।
সবশেষে আল্লাহ আমাদের নবি মুহাম্মদ, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবির  ওপর শান্তি বর্ষণ করুন। আমিন।

Post a Comment

0 Comments