Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

নাস্তিকদের দাবী রাসুল(সাঃ) কোরআন এর আইন অমান্য করে ইদ্দতের সময় কালের জন্য অপেক্ষা না করেই সাফিয়া(রাঃ) এর সাথে বিয়ে করেন!

Counter postঃ
প্রশ্নঃ
নাস্তিকদের দাবী রাসুল(সাঃ) কোরআন এর আইন অমান্য করে ইদ্দতের সময় কালের জন্য অপেক্ষা না করেই সাফিয়া(রাঃ) এর সাথে বিয়ে করেন!

জবাবঃ
******
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন সর্বযুগের,সর্বকালের আদর্শ মানব। বিশ্ব মানবতার জন্য আল্লাহর এক অনন্য রহমত স্বরুপ প্রেরিত। তাই পৃথিবীর সব দেশের এবং সব জনপদের মানুষের উচিত প্রিয় নবীজির আদর্শ আঁকড়ে ধরা এবং তাঁর জীবন অনুসরণ করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে- 'নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ' (সুরা : আহযাব, আয়াত : ২১)।
তিনি ধনী দরিদ্র সাদা কালো সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট ছিলেন। তিনি শুধু দার্শনিকই ছিলেন শুধু তাই নয় বরং তিনি যা আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন তা নিজেই এর বাস্তব নমুনা হিসেবে মানবজাতির জন্য পেশ করেছেন। পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন অঞ্জাম দিয়েছিলেন অত্যন্ত সুচারু রুপে। রাসুল (সাঃ) পৃথিবীর সবচেয়ে বর্বর একটি জাতিকে শ্রেষ্ট জাতিতে পরিণিত করে পৃথিবীতে অনাগতের জন্যও এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন রেখে গেছেন।
রাসুল (সাঃ) বিশ্বজাহানে শান্তি প্রতিষ্টার এক অনন্য নজির স্থাপন করেন, সর্বক্ষেত্রে তিনি সফল ব্যক্তিত্ব। ঐতিহাসিক গিবনের ভাষায় বলা যায়- If all the world was united under one leader, Muhammad would have been the best fitted man to lead the peoples of various creeds, dogmas and ideas to peace and happiness.
আজ অশান্ত বিশ্বে ক্ষমতার দ্বন্দ, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, জাতি গোত্রে হানা-হানি সব কিছুর মুলোৎপাটন করে বিশ্ব মানবতাকে শান্তির সুশীতল চায়া তলে আচ্ছাদিত করতে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আদর্শ অনুস্বরণের কোন বিকল্প নেই।

উল্লেখিত অভিযোগটি খুব জনপ্রিয় একটা মিথ্যা অভিযোগ। যুদ্ধবন্দীনির ক্ষেত্রে ইদ্দত পালনের বিধানটুকু নবী(সাঃ) অবশ্যই পালন করেছিলেন।তিনি ছিলেন সকল ভুলের উর্ধে। নাস্তিকরা তার কর্ম ও নীতির ভুল খুঁজে নাপেয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

প্রথমে প্রশ্ন আসে-
  বন্দী হিসেবে কি তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল?  
*************************************************************
   অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বন্দীদের নিজেদের মতামতের কোন মূল্য থাকে না। সাফিয়া(রাঃ)কে কি জোর করেই বিয়েতে বাধ্য করা হয়েছিল? ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলে-
“যখন সাফিয়া(রাঃ) রাসূল ﷺ এর সামনে আসলেন তখন নবী(সাঃ) তাঁকে বললেন, ‘ইহুদিদের মধ্যে তোমার পিতা ততক্ষণ পর্যন্ত আমার সাথে শত্রুতা বন্ধ করেনি যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ তাকে ধ্বংস করেছেন।’ সাফিয়া(রাঃ) জবাবে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর কিতাবে বলেছেন, ‘কেউই অপরজনের পাপের ভার বহন করবে না [তিনি মূলত বাইবেলের একটা verse উদ্ধৃত করলেন- Ezekiel 18:20]’। তখন রাসূল ﷺ তাঁকে বললেন, ‘ সিদ্ধান্ত তোমার !  তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ কর তবে আমি তোমাকে নিজের জন্য বেছে নিব। আর যদি তুমি ইহুদি থাকাটাকেই বেছে নাও তবে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিব এবং তোমাকে তোমার লোকজনের নিকট পাঠিয়ে দিব। সাফিয়া(রাঃ) জবাবে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছে আসার পর আপনি আমাকে দাওয়াত দেবার আগেই আমি ইসলামকে গ্রহণ করেছি আর আপনাকে সত্য বলে মেনেছি। ইহুদিদের মাঝে আমার কোন অভিভাবক নেই, বাবা নেই, কোন ভাই ও নেই। আমি ইসলামকে কুফরের উপর প্রাধান্য দিলাম। মুক্ত হয়ে আমার লোকজনের নিকট যাবার চেয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই আমার নিকট অধিক প্রিয়।
{ তথ্য সূত্রঃ (George Allen & Unwin, 1983), p. 269, Cited in http://www.bismikaallahuma.org/index.php/articles/umm-ul-mukminin-safiyyah-the-jewish-wife-of-muhammadp}

দ্বিতীয়ত,
যুদ্ধ বন্দি এবং সাধারণ তালাক প্রাপ্ত নারীদের বিয়ের বিধানের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা রয়েছে।এ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সাধারণ জ্ঞানহীন নাস্তিকরা না জেনেই অপবাদ ও অপপ্রচার চালাচ্ছে।

হাদিস হচ্ছেঃ
আবু সাঈদ খুদরী(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল ﷺ আওতাস গোত্রের যুদ্ধবন্দীনির ব্যাপারে বলেন, “গর্ভবতী নারীরা যতক্ষণ পর্যন্ত না সন্তান প্রসব করে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে মিলিত হওয়া যাবে না আর যারা গর্ভবতী নয় তাদের একটি মাসিক না হওয়া পর্যন্ত মিলিত হওয়া যাবে না।অর্থাৎ যুদ্ধবন্দীনিদের ক্ষেত্রে তাদের একটি মাসিক পর্যন্ত সময়টুকুই হচ্ছে ইদ্দত।

সাফিয়া(রাঃ) কিন্তু প্রথমে যুদ্ধবন্দিনীই ছিলেন অতঃপর রাসূল ﷺ তাঁকে মুক্ত করে বিয়ে করেন। বুখারী শরীফের হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি রাসূল ﷺ ইদ্দতের সময়টুকু অপেক্ষা করেছিলেনঃ আনাস ইবনে মালিক(রাঃ) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল ﷺ সাফিয়া(রাঃ)কে নিজের জন্য পছন্দ করলেন এবং তাঁকে নিয়ে রওনা দিলেন। একসময় আমরা সাদ-আস-সাহবা নামক স্থানে পৌঁছালাম। এসময় সাফিয়া(রাঃ) তাঁর মাসিক অবস্থা থেকে পবিত্র হলেন। অতঃপর রাসূল(সাঃ) তাঁকে বিয়ে করলেন।(সহি বুখারী)

আশাকরি উত্তরটা পেয়েছেন।

Post a Comment

0 Comments