Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

মোহাম্মদ সাঃ এর মেরাজের বিজ্ঞানভিত্তিক বাস্তবতা

বিষয়বস্তু : মোহাম্মদ সাঃ এর মেরাজের বিজ্ঞানভিত্তিক বাস্তবতা.

শুরু করছি একটি কাল্পনিক গল্প দিয়ে.

১ম ভাগ: বাংলাদেশ বুয়েট ইন্জিনিয়ারিং এর একদল ছাত্ররা হঠাৎ করেই ঘোষনা দিলেন দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেভাবে উন্নতি হচ্ছে তাতে আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় বুয়েটের নিজস্ব প্রযুক্তিতে একটি রকেটশীপ আকাশে উড্ডয়ন করবে এবং তাতে প্রথম অভিযাত্রী হিসেবে বুয়েটের একজন ছাত্র নাসার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভ্রমন করে আসবে.এজন্য বুয়েট কর্তৃপক্ষ আমেরিকান স্পেস এজেন্সি নাসাকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য নাসার কাছে একটি ইমেইল বার্তা পাঠালেন.

২য় ভাগ: নাসা ইমেইলটি পাওয়ার একদিন পরে একটি ফিরতি ইমেইল পাঠাল যাতে লিখা বাংলাদেশের নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে মাত্র দশ বছরে স্পেস সেন্টার ও রকেটশিপ নির্মাণ তারপর সেটা সফলভভাবে উড্ডয়ন
করে মহাকাশে ঘুরতে যাওয়ার চিন্তা করা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই না তবে  আপনাদের একজন ছাত্রের মহাকাশ স্টেশনে ভ্রমনে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের পছন্দ হয়েছে আর এ ব্যাপারে আমরা আপনাদেরকে একটা সুযোগ দিতে পারি.আগামী দশদিন পরে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে আমাদের যে রকেট উড্ডয়ন হচ্ছে তাতে তিনজন ক্রুর মধ্যে একজন হিসেবে আপনাদের একজন ছাত্রকে আমরা পাঠাতে চাই.যদি এ ব্যাপারে আগ্রহী হন তাহলে আপনাদের একজন ছাত্রকে আগামী তিন দিন পরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এমিরেটসের ফ্লাইটে ফ্লোরিডার উদ্দেশ্যে প্রেরন করুন.

গল্পের প্রথমভাগে বাংলাদেশের দৃষ্টিকোন থেকে দশ বছরে বুয়েটের একজন ছাত্রকে মহাকাশে ভ্রমনে পাঠানোর যে বিষয়টি ছিল হাস্যকর ব্যাঙ্গাত্নক অবাস্তব দ্বীতিয় ভাগে আমেরিকার দৃষ্টিকোন থেকে সেই কাজটি মাত্র দশদিনেই হয়ে গেল যৌক্তিক এবং বাস্তবনির্ভর.

এবার আসাযাক মোহাম্মদ সাঃ এর মেরাজ প্রসঙ্গে.

বর্তমান বিশ্বের বিজ্ঞানের আলোকেও মেরাজের মতো একটি ঘটনা অবাস্তব ও কাল্পনিক.দুইশো বিলিয়ন নক্ষত্র নিয়ে গঠিত আমাদের এই গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ে আর এরকম আরো দুইশো বিলিয়নেরও বেশি গ্যালাক্সি নিয়ে গঠিত আমাদের এ মহাবিশ্ব.যদি সর্বোচ্চ ধ্রুব গতি আলোর বেগেও কেউ মহাকাশে ছুটতে পারে তারপরও শুধুমাত্র আমাদের পাশের গ্যালাক্সি এন্ড্রুমিডায় পৌছতেই সময় লাগবে পচিঁশ লক্ষ্য বছরেরও বেশি.তাহলে দুইশো বিলিয়নেরও ওপরে গ্যালাক্সি পাড়ি দিতে কতো সময়ের প্রয়োজন.এই যাবতীয় গ্যালাক্সি আবার প্রথম আকাশের নিচে.প্রথম আকাশের মতো এরকম পুরুত্বের আরো সাতটি আকাশ তারপরে সিদরাতুল মুনতাহা.যেখান পর্যন্ত জীব্রাইল আঃ এর যাওয়ার অনুমতি ছিল.তার উপরে প্রতিটি আকাশের সমান পুরুত্বের সত্তুর হাজার নূরের পর্দা.তারপর আল্লাহর আরশ.তাই এই বিশাল পথ বর্তমান বিশ্বের বিজ্ঞানের আলোকে পাড়ি দেওয়া অবাস্তব ও কাল্পনিক.যার কোনই ভিত্তি নেই.কিন্তু আমরা জানি মোহাম্মদ সাঃ কে মেরাজে যাওয়ার জন্য আল্লাহ আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন.আর তার যাওয়ার জন্য জিব্রাইল আঃ ও বাহন বোরাকও আল্লাহই পাঠিয়েছিলেন.এ ব্যাপারে আল্লাহ কোরআনে বলেন,

"পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুলু হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত" সূরা  বনী ঈসরাইল ১৭/১.

এই আয়াতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে  মোহাম্মদ সাঃ এর মেরাজ হয়েছে সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছায় ও কুদরতে.

সেই আল্লাহ যিনি কোরআনে বলেন,

তিনি ُআসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা। আর তিনি যখন কোন
বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন কেবল বলেন ‘হও’ ফলে তা হয়ে
যায়। (আল-বাকারাহ, ২/১১৭.

সেই আল্লাহ যিনি বলেন,

নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন। সুরা আরাফ ৭/৫৪.

সেই আল্লাহ যিনি বলেন,

তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।সুরা বাকারা ২/২৫৫.

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন অভিযাত্রীকে দশ বছর পরে মহাকাশে পাঠানো যেখানে অবাস্তব ও কাল্পনিক সেখানে আমেরিকার প্রেক্ষাপটে মাত্র দশ দিন পরে সেটা হয়ে উঠে বাস্তব.যেই আল্লাহ কোন কিছু হও বললেই হয়ে যায়,যিনি মাত্র ছয়দিনে এ সুবিশাল মহাবিশ্ব সৃষ্টি করতে সক্ষম আর যার অসিম জ্ঞানসীমা কারোও পক্ষেই আয়ত্ব করা সম্ভব নয় সেই আল্লাহর পক্ষে কাউকে সামান্য সময়ে সাত আসমান জমিন পরিভ্রমণ করিয়েও নিয়ে আসা সম্ভব.আর পৃথিবীর জ্ঞান বিজ্ঞানের চিন্তাধারা দিয়ে মেরাজের মতো একটি ঘটনাকে বিচার করাও পাগলের প্রলাপ ছারা আর কিছুই না.

Post a Comment

0 Comments