Header Ads Widget

Responsive Advertisement

Ticker

6/recent/ticker-posts

নাস্তিক ও ইসলামবিরোধীদের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের জবাবঃ

নাস্তিক ও ইসলামবিরোধীদের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের জবাবঃ

মিথ্যাচারঃ
হাফসা(রাঃ) কে ধোঁকা দিয়ে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে তার কৃতদাসী মারিয়া(রাঃ) এর সাথে সহবাস করেছেন রাসুল(সাঃ) (নাউজুবিল্লাহ)! পরবর্তিতে এই সমস্যার সমাধানের জন্য নিজের ইজ্জত ও পারিবারিক কলহ মইইটাতে  সূরা আততাহরিমের প্রথম ৫আয়াত নাজিল করেন(নাউজুবিল্লাহ)!

জবাবঃ
আমরা আততাহরিমের  আয়াত (স্ক্রিনশট দিয়েছি)থেকে নবীর(সাঃ)স্ত্রীদের দ্বারা কোন পারিবারিক বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলার কথা অনুমান করতে পারলেও তারা কারা এবং কেন কিসের জন্য এই পারিবারিক বিদ্রোহ বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছিলেন তা এই সব আয়াত থেকে জানতে পারিনা।
হাদিসেও স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ নেই তাহলে এখানে ইসলামী-বিরোধী শক্তি মারিয়া রাঃ-এর সাথে মুহাম্মদ সাঃ-এর যৌনতার প্রেক্ষিতে হাফসা রাঃ ও আয়েশা রাঃ-এর প্রতিক্রিয়া কেমন করে আবিষ্কার করল?
তারা আব্বাস রাঃ কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদিস দিয়ে উল্লেখিত দুইজন স্ত্রী যে আয়েশা রাঃ আর হাফসা রাঃ ছিলেন তা প্রমাণ করতে পারলেও সে হাদিস দিয়ে কিন্তু তাদের উল্লেখিত ঘটনা প্রমাণ করতে পারেনি।
আমরা এখন দেখব বোখারি শরীফে ভল্যুম ৩ বই ৪৩ হাদিস নং ৬৪৮ হাদিসে কী উল্লেখ আছে?

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
"যে দুইজন নারী সম্পর্কে কোরআন পাকে (আয়াত ৬৬:৪) বলা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে হযরত উমর রাঃ কে প্রশ্ন করার ইচ্ছা বেশ কিছুকাল পর্যন্ত আমার মনে ছিল। অবশেষে একবার তিনি হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে আমিও সফরসঙ্গী হয়ে গেলাম। (হজ্জ থেকে ফেরার পথে) ওমর একপাশে গেলে (প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে), আমিও (ওযুর) পানি নিয়ে তার সাথে যাই। যখন তিনি ফিরলেন, আমি তার হাতে পানি ঢালছিলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, "ওহ বিশ্বাসীদের প্রধান! নবী করিম সা. এর কোন দুজন নারীর ব্যাপারে কোরআনের এই আয়াত অবতীর্ণ হয়েছেঃ যদি তোমরা দুজন তওবা করো।" (৬৬:৪)
তখন উমর রাঃ বললেন, "আমি এবং বনী উমাইয়া বিন জাহিদ গোত্রের আমার এক আনসারী প্রতিবেশী মদীনার আওয়ালীতে বাস করতাম ও পর্যায়ক্রমে রাসুলুল্লাহ সাঃ কাছে যেতাম। তিনি একদিন যেতেন আর আমি অন্যদিন। যেদিন আমি যেতাম রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সেদিনকার আদেশ-নির্দেশাবলী সমেত ঘটনাসমূহ তাকে (প্রতিবেশীকে) বলতাম এবং যেদিন তিনি যেতেন, তিনিও আমার কাছে অনুরূপ করতেন।
আমরা, কোরায়েশ পুরুষরা, যখন মক্কায় বাস করতাম তখন নারীদের উপর অধিক কর্তৃত্ব ভোগ করতাম, কিন্তু আমরা যখন মদিনায় আসলাম তখন লক্ষ্য করলাম যে, আনসার নারীরা পুরুষদের উপর অধিক কর্তৃত্ব ভোগ করে। ফলে, আমাদের নারীরা আনসার নারীদের অভ্যাস গ্রহণ করতে শুরু করে। একদিন আমি আমার স্ত্রীর প্রতি চিৎকার করলে আমার স্ত্রীও আমার সাথে মুখে মুখে তর্ক করলেন ও পাই পাই করে বুঝিয়ে দিলেন। আমি এটা অপছন্দ করলে তিনি বললেন, "আপনাকে প্রতি উত্তর দিলে সেটাকে আপনি খারাপ ভাবে নিচ্ছেন কেন? আল্লাহর কসম! নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীরাও তাঁর সাথে মুখে মুখে তর্ক করেছেন এবং স্ত্রীদের কেউ কেউ দিন থেকে রাত অবধি তাঁর সাথে কথা পর্যন্ত বলেননি।" আমার স্ত্রী যেটি বললো আমাকে ভীত করলো এবং আমি জিজ্ঞেস করলাম, "তাঁদের মধ্যে যেই এমন করে, সে-ই ভয়ানক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।"
আমি পোশাক পরিধান করে হাফসার কাছে গেলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি কি দিন থেকে রাত অবধি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে রাগান্বিত রেখেছ?"
সে হ্যাঁ বোধক জবাব দিল। আমি বললাম, "তুমি বিধ্বস্ত পরাজিত নারী! তুমি কি আল্লাহর রাসুলকে রাগান্বিত করে আল্লাহর ক্রোধের কারণ হতে ভীত হও নাই? এভাবে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে!
(১) আল্লাহর রাসুলকে বেশী কথা বলো না,
(২) কোন অবস্থাতেই তাঁর সাথে মুখে মুখে তর্ক করো না এবং তাঁকে অসন্তুষ্ট করো না।
(৩) তোমার যা খুশী দরকার আমার কাছে চাও এবং
(৪) কখনোই তোমার প্রতিবেশীকে (আয়েশা রা. কে) নবীজীর প্রতিপক্ষ বানিয়ো না, যদিও সে তোমার চেয়ে অধিক সুন্দরী ও মুহম্মদ সাঃ এর বেশী প্রিয়।"
——–সে সময় গুজব ছিল যে, ঘাসানরা (শ্যাম দেশের একটি গোত্র) আমাদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ঘোড়া প্রস্তুত করছে। এক রাতে আমার আনসার প্রতিবেশী (তাঁর পালায় রাসুলুল্লাহ সাঃ এর বাড়ি থেকে ফিরে) খুব স্বন্ত্রস্তভাবে আমার দরজায় কড়া নাড়তে লাগলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "কি হয়েছে? ঘাসানেরা কি এসেছে?" তিনি বললেন, "তারচেয়েও খারাপ, আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ! রাসুলুল্লাহ সাঃ তাঁর স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন।" আমি বললাম, হাফসা বিধ্বস্ত হয়েছে। আমি এমনটি আগেই ভেবেছিলাম।
আমি পোশাক পরিধান করে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে ফজরের নামাজ আদায় করলাম। এরপরে তিনি উপরের কামরায় চলে গেলেন। আমি হাফসার কাছে গিয়ে তাকে ক্রন্দনরত পেলাম। আমি তাকে বললাম, "কেন কাঁদছ? আমি কি তোমাকে আগেই সাবধান করিনি?" আমি জিজ্ঞেস করলাম, "রাসুলুল্লাহ সাঃ কি তোমাদের সকলকে তালাক দিয়েছেন?" সে বললো, "আমি জানি না। তিনি সেখানে উপরের ঘরে আছেন।"
আমি বের হলাম এবং কিছু মানুষের জটলা দেখতে পেলাম যাদের কেউ কেউ কাঁদছিল। আমি তাদের সাথে কিছুক্ষণ বসলাম, কিন্তু আমি পরিস্থিতি সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই আমি উপরে গেলাম এবং নবীজীর এক কৃষ্ণাঙ্গ দাসকে বললাম, "তুমি কি উমরের জন্য রাসুলুল্লাহ সাঃ এর অনুমতি প্রার্থনা করবে?" সে ভেতরে গেল এবং এসে বললো, "আমি আপনার কথা তাঁর কাছে বলেছি কিন্তু তিনি কোন জবাব দেন নি।" আমি জটলার কাছে ফিরে এসে বসলাম, কিন্তু পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে আবার উপরে দাসের নিকট গিয়ে বললাম, "তুমি কি ওমরের জন্য নবীজীর অনুমতি প্রার্থনা করতে পার?"সে গেল এবং ফিরে এসে একই কথা বললো। যখন আমি ফিরে আসছি, তখন দাস বললো, "রাসুলুল্লাহ সাঃ আপনাকে অনুমতি দিয়েছেন।"
সুতরাং আমি ভিতরে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গেলাম এবং তাকে একটি মাদুরে শয়নরত অবস্থায় পেলাম। আমি বললাম, "আপনি কি আপনার স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন?" তিনি আমার দিকে চোখ তুলে তাকালেন এবং না বোধক উত্তর দিলেন। আমি দাঁড়িয়ে বলতে লাগলাম, "আপনি কি আমার কথা শুনবেন? হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কোরায়েশরা নারীদের উপর অধিক কর্তৃত্ব পেতাম, এবং এখানে আমরা যাদের কাছে এসেছি তাদের নারীরা তাদের উপর অধিক কর্তৃত্ব ভোগ করে"। এরপরে আমি পুরো ঘটনা তাঁকে বলি (তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে)। এতে তিনি হাসলেন। আমি তখন বললাম, "আমি হাফসার নিকট গিয়েছিলাম এবং তাকে বলেছি: তোমার প্রতিবেশীকে (আয়েশা রাঃ কে) নবীজীর প্রতিপক্ষ বানিয়ো না, যদিও সে তোমার চেয়ে অধিক সুন্দরী ও মুহম্মদ সাঃ এর বেশী প্রিয়।" এতে নবীজী আবার হাসলেন। আমি বসলাম এবং বললাম, "আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন যেন আপনার অনুসারীরা অনেক উন্নতি করতে পারে, যেহেতু পারস্যয়ীয়া ও বাইজেন্টাইনরা আল্লাহকে না মেনেও কতই না উন্নতি করেছে, তাদের কতই না সম্পদ।" রাসুলুল্লাহ সাঃ উঠে বসলেন এবং বললেন, "ওহ ইবনে আল খাত্তাব! তোমার কি কোন সন্দেহ আছে (যে এস্থান দুনিয়ার মধ্যে সেরা)? মানুষ তার ভালো কাজেরই কেবল প্রতিফল পায়।"
আমি তাঁকে আল্লাহর কাছে আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বললাম।

এই হাদিস থেকে তাহরীমের চার নং আয়াতের উল্লেখিত স্ত্রী দুইজন আয়েশা রাঃ ও হাফসা রাঃ ছিলেন এবং হাফসা রাঃ আয়েশা রাঃকে রাসুল সাঃ এর প্রতিপক্ষ বানানোর কথা জানতে পারলেও এই পুরা হাদিস থেকে এখানে মারিয়া রাঃ-এর কোন কথার উল্লেখ পাচ্ছিনা!
এইটি কি অবাক করা বিষয় নয়, যে বা যার কারণে পাঁচ পাঁচটি আয়াত নাজিল হয়েছিল বা মুহাম্মদ সাঃ এই আয়াত নাজিল করে মারিয়া রাঃ এর ঘটনাকে চাপা দিয়েছিলেন সে ঘটনার মূল পাত্রী মারিয়া রাঃ এর কোন উপস্থিতি নেই! এই হাদিস থেকে এই সব আয়াত নাজিলের যে কারণ পাচ্ছি তা হচ্ছে-

১। তোমার যা খুশী দরকার আমার কাছে চাও।
২। এবং কখনোই তোমার প্রতিবেশীকে (আয়েশা রাঃকে) নবীজীর প্রতিপক্ষ বানিয়ো না, যদিও সে তোমার চেয়ে অধিক সুন্দরী ও মুহম্মদ সাঃ এর বেশী প্রিয়।
এখান থেকে যা জানা যায় তা হচ্ছে- ১। পার্থিব সুযোগ সুবিধা দাবি করা। ২। আয়েশা রাঃকে রাসুল সাঃ এর প্রতিপক্ষ বানানো।

আবার দেখি- "আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন যেন আপনার অনুসারীরা অনেক উন্নতি করতে পারে, যেহেতু পারস্য বাসরীয়রা ও বাইজেন্টাইনরা আল্লাহকে না মেনেও কতই না উন্নতি করেছে, তাদের কতই না সম্পদ।" রাসুলুল্লাহ সাঃ উঠে বসলেন এবং বললেন, "ওহ ইবনে আল খাত্তাব! তোমার কি কোন সন্দেহ আছে (যে এস্থান দুনিয়ার মধ্যে সেরা)? মানুষ তার ভালো কাজেরই কেবল প্রতিফল পায়।" আমি তাঁকে আল্লাহর কাছে আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বললাম।

এখানেও স্পষ্টত মারিয়া রাঃ এর কোন কথা উল্লেখ করা হয় নাই শুধু আছে সহায় সম্পদ, পার্থিব উন্নতির কথা। এই হাদিসের আড়ালে চাপা পড়ে আছে নবী পত্নীদের চির অভাব অনটন আর কষ্টের কথা। যদিও মর্যাদা, সুবিধা প্রাপ্তি ইত্যাদি নিয়ে স্ত্রীরা প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছিলেন তথাপি তারা রাসুল সাঃকে কত গভীর ভালবাসতেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিভিন্ন  ঘটনায়।

মুহাম্মদ সাঃ যখন গনিমতের মাল লাভ করতে থাকেন তখন তা সাধারণ গরীব জনসাধারণের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন, নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে কৃচ্ছতায় রাখতেন। আর নবী পত্নীরা সাধারণ জনসাধারণ যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে সেই অধিকার পাবার জন্য নবী সাঃ এর উপর চাপ প্রয়োগ করেছেন। যা মূলতঃ অন্যায় ছিলোনা। সোজা কথায় এই আয়াতগুলো এবং সুরা আযহাবের আয়াতগুলোতেও মারিয়া রাঃ বা নারী ঈর্ষার কোন কথা উল্লেখ করা হয়নি।

সবশেষে  আমি চ্যালেঞ্জ করছি সেই অপ প্রচারকারীদেরকে তারা প্রমাণ করুক যে, মারিয়া (রাঃ) হাফসা( রাঃ)এর দাসী ছিলেন।
২য়তঃ প্রমাণ করুক যে মুহাম্মদ সাঃ মিথ্যা কথা বলে হাফসা রাঃ-কে উনার বাবার বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন।
এরা আগেও কখনও পারেনি এখনও তা পারবেনা, কারণ এই অপপ্রচারটি যিনি সর্ব প্রথম নেটে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই ফেইথফ্রিডমের কর্ণধার আলি সিনাও তা প্রমাণ করতে পারেনি।

(লেখা সংক্ষিপ্ত করার জন্য স্ক্রিনশট এর মাধ্যমে মারিয়া(রাঃ) এর পরিচয়, আততাহরিমের ৫আয়াত এবং নাস্তিকদের মিথ্যাচার মূলক বক্তব্য তুলে ধরেছি। অনগ্রহ করে দেখেনিলে কৃতজ্ঞ থাকব।)

Post a Comment

0 Comments