Counter postঃ
পাবনা ফেরত ডাইল বিজ্ঞানী মুরগি Nil Nimo তার গ্রুপে পোষ্ট দিয়েছে রোজা মানুষের জন্য অসাস্থকর ও এটি আদীম যুগের বর্বরতা!
তার এই দাবী কতটা ভ্রান্ত তার উত্তর দেয়ার জন্যই আমার আজকের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা!
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে সিয়ামের উপকারিতাঃ
পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনায় মানুষের স্বাস্থ্যগত কোন ক্ষতি তো হয়ই না বরং চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, স্বাস্থ্যগত কল্যাণসাধনেও রমজানের রোজা উপকারী। ১৯৫৮-১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ডা. গোলাম মোহাম্মদ মুআযযাম
ও তার সহযোগিদের রমজান মাসে মানব শরীরের উপর সিয়ামের প্রভাব সম্পর্কে পরিচালিত গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে, সিয়ামের কারণে মানব শরীরের কোন ক্ষতি হয় না।
একাদশ শতাব্দির শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক ইবনে সিনা তাঁর অনেক রুগীদের তিন সপ্তাহ রোজা পালনের উপদেশ দিতেন। আধুনিক বিজ্ঞান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই মর্মে মত পোষণ করেছে যে, রোজা সুস্থ শরীর ও স্বাস্থ্যের সহায়ক । ১৯৫১ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্যাথলজি বিভাগে গ্যাষ্ট্রিক জুসের উপর বিশ জন চিকিৎসক গবেষণা করে দেখেছেন যে, রোজা গ্যাষ্ট্রিক আলসার, পেট ব্যথার উপকার করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা পালন করে। সারা বছরে দেহাভ্যান্তরে যে জৈব বিষ (টক্রিন) জমা হয় তা রোজার আগুনে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে রক্ত বিষমুক্ত হয়। রোজা লিভার, পীহা, কিডনী, মূত্রথলি ও পরিপাকতন্ত্রকে দীর্ঘায়ু দান করে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে অস্বাভাবিক কোলেষ্টেরল, শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি নিয়ন্ত্রন করে। রোজা মস্তিস্ক ও স্নায়ুতন্ত্রকে সর্বাধিক উজ্জীবিত করে। দেহের অনুকোষ ও প্রজনন অঙ্গ সমূহকে নব-জীবনী শক্তি দান করে। হাঁপানী, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, মাসিক ঋতুর গোলযোগ, আরটিকেরিয়া, মিগ্রেইন, রোগের প্রতিষেধক হলো রোজা। ডাঃ পেভি ফ্যস ও বার্নাভের মতে, রোজার দ্বারা মেলিটাল, গাইকেসিরিয়া, মেলিকুরিয়া রোগের উপশম হয়। আধুনিককালের বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ থেকে দেখছেন যে, রোজা পালনের ফলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পায় এবং বিপাকক্রিয়া শক্তিশালী হয়, যা ডায়াবেটিস রোগ থেকে আত্মরক্ষার সম্ভাবনাকে উজ্জল করে তোলে।
হার্টের স্বভাবিক কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে চলে, করোনারি ধমনীর মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে রক্ত প্রবাহিত হলে। করোনারি ধমনীর অনেক শাখা-প্রশাখা হৃৎপিন্ডের পেশির ভেতরে বিস্তার লাভ করে এবং কোষগুলোর স্বাভাবিক কাজকর্ম ঠিক রাখে। কিন্তু হার্টের কাজকর্মে বিপত্তি ঘটে তখন, যখন করোনারি ধমনীতে জমে যায় টুকরো টুকরো চর্বি। ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। আর এ কারণেই হঠাৎ হার্টফেল করে। কেউ কেউ মারাও যায়। কিন্তু বছরে এক মাস রোজা পালন করার ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনারি ধমনী চর্বিমুক্ত থাকে।
গ্যাসট্রিক রোগীদের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, রোজা পালনের কারণে, তাদের ধারণা মতো Acidity তো বৃদ্ধি পায়-ই না বরং দীর্ঘ এক মাস রোজা পালন করলে অস্বাভাবিক গ্যাসট্রিক এসিডিটি ( Abnormal Gastic Acidity )স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে এবং পেপটিক আলসার থেকে রোগী পর্যায়ক্রমে পরিত্রাণ লাভ করে।
আমেরিকার বিখ্যাত চিকিৎসাবিদ Dr. Dewey এ বিষয়ে গবেষণার রিপোর্ট পেশ করে বলেছেন: ‘
‘ Take the food away from stomach and then you have begun to starve not the sick man but the disease. The digestive organs are given some rest to work with redoubled energy and vigour just as a land which was left without cultivation for one year following or just as a man can work with redoubled vigour after some rest.’
সিয়াম পালনের মাধ্যমে ধূমপান ও নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করা সম্ভব। ফলে মানুষের দেহে জটিল রোগ যেমন- ক্যান্সার, হার্ট-স্ট্রোক,ব্রেইন স্ট্রোকসহ বহু জটিল রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ডা. এমারসন বলেন, সিয়ামে মানুষের মনের ওপর দারুন প্রভাব পড়ে। যেমন কর্মে মনোযোগ আসে, পশুত্ব দূরিভূত হয়, যা সমাজ গঠনে সহায়তা করে।
আলোচ্য চিকিৎসা বিজ্ঞনীদের আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সিয়াম পালনে মানুষের স্বাস্থ্য গত কোন ক্ষতি হয়না। বরং উপকার হয়।
তথ্যপুঞ্জিঃ ১। আল-কোরআন
২। মাহে রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত
-ড. মুহা: নজীবুর রহমান
৩। দৈনিক ইনকিলাব
১৭ আগষ্ট ২০১১
৪। ডায়বেটিস রোগীর রোজা
-ডা. মো: ফরিদ উদ্দিন
৫। ডা. ডিওয়ের গবেষণার রিপোর্ট।
0 Comments